ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখ সেনাবাহিনী মোতায়েন করে রেখেছে রাশিয়া

ইউক্রেন সীমান্তে সেনাবাহিনীর প্রায় এক লাখ সদস্যকে আগে থেকেই মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র রাশিয়া। রুশ সৈন্যরা যে কোনো মুহূর্তে দেশটিতে আক্রমণ চালাতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উত্তেজনাকর এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন সীমান্তে আরও এক লাখ রুশ সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনের উত্তর সীমান্তে সেনাবাহিনীর এসব মোতায়েন করেছে মস্কো।


বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকালে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন অভিযোগটি সামনে আনে। তাদের ভাষায়, ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক সমাবেশ বৃদ্ধির কাজ অব্যাহত রেখেছে মস্কো। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি তথ্য জানিয়েছে।


পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, রাশিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায়ও এসব সক্ষমতা ইউক্রেন ও বেলারুশ সীমান্তে অব্যাহতভাবে জড়ো করা হচ্ছে বলে আমরা দেখতে পারছি।


তিনি আরও বলেন, ঠিক কী পরিমাণ সেনা সদস্যরা মোতায়েন করা হয়েছে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা আমরা উল্লেখ করতে পারছি না; কারণ সীমান্তে মোতায়েন করা সৈন্যর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।


রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উল্লেখ করে কিরবি বলেন, উত্তরে তিনি নিশ্চিত ভাবেই আরও এক লাখ সৈন্য মোতায়েন করেছেন। এমনকি সেনা ও অন্যান্য সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তিনি অব্যাহতভাবে কাজ করছেন। এছাড়া কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ অতিরিক্ত আরও ব্যাটালিয়ন ইউক্রেন সীমান্তে যাচ্ছে বলে আমরা এরই মধ্যে ইঙ্গিত পেয়েছি।


আরও পড়ুন : যৌথ মহড়ায় রুশ-বেলারুশ, উদ্বেগে ন্যাটো-যুক্তরাষ্ট্র


বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন যাবৎই সেনাবাহিনীর প্রায় এক লাখ সদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। রুশ সৈন্যরা যে কোনো মুহূর্তে দেশটিতে আক্রমণ চালাতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে এখনই হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে শুরু থেকেই দাবি করে আসছে মস্কো।


পেন্টাগনের মুখপাত্র মনে করেন, প্রতিদিন তিনি (পুতিন) বিষয়টির বিকল্প যোগ করছেন। সীমান্তে প্রতিদিন তিনি তার সক্ষমতা বাড়াচ্ছেন। এরই মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে থাকা একটি অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করতে প্রতিদিনই পুতিন কাজ করছেন।


অবশ্য সংকট নিরসনে পুতিনের ভূমিকার গুরুত্বও তুলে ধরেছে ওয়াশিংটন। কিরবির ভাষায়, সীমান্ত থেকে সেনা সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে এবং কূটনৈতিক পথে হেঁটে প্রেসিডেন্ট পুতিন খুব সহজেই ওই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারেন।


এর আগে চলতি সপ্তাহেই মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছিল, ইউক্রেনে যে কোনো দিন আক্রমণ চালানোর নির্দেশ দিতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দিন দুয়েক আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বাসভবন হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার জ্যাক সুলিভান বলেছিলেন, কয়েকদিন বা সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দিতে পারেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।


সে সময় তিনি আরও বলেন, আমরা এখন একটি মাঝামাঝি অবস্থানে আছি। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া যে কোনো দিন সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। অথবা এটি এখন থেকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেও হতে পারে। অথবা রাশিয়া হয়তো কূটনৈতিক রাস্তাও বেছে নিতে পারে।



পরবর্তী সময়ে এবিসি চ্যানেলর ‘দিজ উইক’ অনুষ্ঠানে সুলিভান বলেছিলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর নির্দেশ দেবেন; বর্তমানে এমন সম্ভাবনা বেশ জোরালো। এটি আগামীকালও হতে পারে আবার, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেও হতে পারে। সীমান্তে সৈন্য সমাবেশের মাধ্যমে পুতিন এমন এক অবস্থানে চলে গেছেন, যেখান থেকে তিনি আগ্রাসী আচরণ করতে সক্ষম।

ads

Our Facebook Page